‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর অধ্যাদেশ, ২০২৫’ এর খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এই অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনুস। খসড়া অধ্যাদেশ প্রসঙ্গে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, আমরা নীতিগতভাবে অনুমোদন করেছি, সেটা হচ্ছে- জুলাই ‘গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর অধ্যাদেশ’। গণভবনের জায়গায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানকালে আমাদের যে তরুণরা প্রাণ হারিয়েছেন, যাদের চিরস্থায়ী অঙ্গহানী হয়েছে, আমাদের যে অপূরণীয় আত্মত্যাগের ঘটনা আছে, আর ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারকে পতনের একটা স্মারক হিসেবে স্মৃতিকে ধরে রাখার জন্য, জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্য আমরা গণভবনে জুলাই স্মৃতি জাদুঘর করছি। তিনি আরও বলেন, এটা আমরা একটা আলাদা জাদুঘর হিসেবে স্থাপন করতে চাই। সেখানে লোকবল লাগবে, আর্থিক সংশ্লিষ্টতা আছে, সেজন্য আরও একটু আলাপ-আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। এটাও আমরা খুব দ্রুত চেষ্টা করবো। খুব দ্রুত এটা চূড়ান্তভাবে অনুমোদন করার জন্য মোটামুটি আইনগত ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। আইন উপদেষ্টা বলেন, সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশ, ২০২৫, এটা নিয়ে বোধহয় আমরা ২৫-৩০ বছর যাবৎ কথা বলছি। এটা ২০০৬ সালের দিকে খুব ভালোভাবে একটা চেষ্টাও করা হয়েছে। চেষ্টাও হয়েছিল আইনটা করার। কোনোভাবেই করা যাচ্ছিল না। কিন্তু আপনারা জানেন, আমাদের জাতীয় ঐকমত্য কমিশন আছে, বিচার বিভাগীয় সংস্কার কমিশন আছে, সংস্কারের রোডম্যাপ আছে, সব জায়গায় সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়েছে। আমরা এই আইনটা নীতিগতভাবে অনুমোদন করেছি। আসিফ নজরুল বলেন, এই আইনটা যখন চূড়ান্ত অনুমোদন হয়ে যাবে, তখন আদালতের যারা বিচারক আছেন, তাদের বদলি-পদায়ন-পদোন্নতি, তাদের শৃঙ্খলা সংক্রান্ত সব ব্যাপার, সবকিছু সুপ্রিম কোর্টের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে। আর সুপ্রিম কোর্টের নিজস্ব বাজেট ব্যবস্থাপনা থাকবে। তাদের সম্পত্তি, তাদের কী কী খাতে তারা উন্নয়ন করবে, কী কী পদ সৃজন করবে- এই সব ব্যাপারে তাদের একটা আর্থিক স্বাধীনতা থাকবে। এটা নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। আমাদের মনে হয়েছে- কিছু কিছু বিষয়ে আরও আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। বিশেষ করে যেহেতু এটার সঙ্গে আর্থিক সংশ্লেষ রয়েছে। অবশ্যই অর্থ উপদেষ্টার একটা মতামতের প্রয়োজন রয়েছে। আইনটা করার সময় সেই মতামতটা নেওয়া হয় নাই। জনপ্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করার প্রয়োজন রয়েছে। আসিফ নজরুল বলেন, আরেকটা আইন, যেটা নীতিগতভাবে অনুমোদন হয়েছে, সেটা হচ্ছে দুদক অধ্যাদেশ (দুদক অর্ডিনান্স)। সেখানে কিছু কিছু বিধান করা হয়েছে। বাংলাদেশে যারা থাকবে- বাংলাদেশি হোক বা বিদেশি হোক, বাংলাদেশে অবস্থানকালে অন্যদেশে যদি কোনো দুর্নীতি করে, সেটার বিচারও দুদকের মাধ্যমে, সেটার তদন্তও দুদকের মাধ্যমে করা যাবে। আর ওখানে জ্ঞাত আয়ের সংজ্ঞাতে বলা হচ্ছে- জ্ঞাত আয় মানে বৈধ আয়। জ্ঞাত আয় মানে অবৈধ আয় নয়। এগুলো স্পষ্ট করা হয়েছে। বাংলাদেশের যে জায়গায় দুদকের অফিস থাকবে, সেখানেই দুদকের স্পেশাল কোর্ট গঠন করার বিধান করা হয়েছে। দুদকের যারা চেয়ারম্যান থাকবেন, বা দুদকের যিনি প্রধান থাকবেন, তাদের বাছাই করার জন্য সাত সদস্যের বাছাই কমিটি করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একজন বিচারকের নেতৃত্বে তা হবে এবং তারা গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রার্থী বাছাই করবে। তাছাড়া তারা নিজেরাও প্রার্থী বাছাই করবে। কমিশনের যে কার্যাবলি দুদকের, সেটার কার্যাবলি বাড়ানো হয়েছে। ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। এজাহার দায়ের, তদন্ত ও অনুসন্ধানের ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন
- আপলোড সময় : ২৪-১০-২০২৫ ১২:৫১:০৯ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ২৪-১০-২০২৫ ১২:৫১:০৯ অপরাহ্ন
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ
স্টাফ রিপোর্টার